Thursday, November 10, 2011

জেনে নিন গোপন ক্যামেরা এবং আয়না থেকে বাঁচার উপায়

আজকাল চলতে ফিরতে আমাদের নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই আর যতটুকু আছে তা অপ্রতুল।আর তাই বর্তমানে গোপন ক্যামেরা এবং আয়না একটি আতংকের নাম।শপিংমলের টয়লেট থেকে শুরু করে সবখানে এই গোপন ক্যামেরার আতংক।ইন্টারনেটে ঢুকলেই দেখা মিলে ক্যামেরার ভিডিও ছবি বা নিউজ।আমাদের মা বোনদের ইজ্জতের দাম তাদের কাছে হাসির খোরাক।

প্রথমেই বলে রাখি গোপন ক্যামেরায় এখন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। ফলে আপনার পাশের মানুষটির কলম বা হাতঘড়িতেও থাকতে পারে গোপন ক্যামেরা।
বলে রাখা ভাল: বিভ্রান্ত হবেন না। সঠিক তথ্য জানুন:

১। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ক্যামেরা সনাক্তকরন যায় কি? সহজ উত্তর হলো না। মোবাইল ফোনে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এবং গোপন ক্যামেরার প্রযুক্তি ভিন্ন। ফলে গোপন ক্যামেরা থাকলে মোবাইল নেটোর্য়াক জ্যাম হবার কোন কারন নেই। গোপন ক্যামেরা বসানো যায়গায় আপনি ভালভাবেই মোবাইলে কথা বলতে পারবেন এটি নিশ্চিত ১০০%। সাধারনতভাবে মোবাইল ফোনে GSM-900 এবং GSM-1800 সিগনাল ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে গোপন ক্যামেরাতে ২.৫ গিগা হার্জের এফ সিগনাল ব্যবহার করা হয়, যা মোবাইল সিগনালের চেয়ে ভিন্ন। আর যদি তার দিয়ে (সেটা অপটিক্যাল ফাইবার বে যেকোন ধরনের তার হোক না কেন) গোপন ক্যামেরা ব্যবহার করা হয় তাহলেও ত মোবাইল দিয়ে সনাক্ত কোনভাবেই করা যাবে না।

২। ডুয়েল মিররের এপাশ থেকে দেখলে এটাকে একটা সাধারণ আয়না ছাড়া কিছুই মনে হবে না। কিন্তু উল্টো পাশ থেকে আয়নার এপাশের সব কিছুই পরিষ্কার দেখায় যায় সাধারণ কাঁচের মতো। এটিও আংগুল চাপাচাপি করে ধরতে পারবেন না। আপনার সান গ্লাস দিয়েই এটি টেস্ট করতে পারেন।
সুতরাং অযথা বোকা হবেন না! কেউ কেউ ফেসবুক সহ ব্লগে ব্লগে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

আসুন দেখি কিভাবে চিহ্নিত করতে পারেন গোপন ক্যামেরা, যদিও কাজটি স হজ নয়:-

১। গোপন ক্যামেরা আছে সন্দেহ হলে, চারপাশ ভাল করে দেখুন। মুলত ছাদের কোনা, দেয়ালের ছবি, ফুলের টব অথবা আয়নার পিছনে বসানো হয় এটি। সুতরাং এই জায়গাগুলি ভাল করে খেয়াল করুন।

২। সিডি প্লেয়ার বা এজাতীয় বস্তুতেও বাসনো হয়। মুলত রুমের অন্ধকার এলাকা গুলিতে গোপন ক্যামেরা বসানো হয়, যাতে আলোকিত এলাকার ছবি ভাল মত আসে।

৩। রুম পুরোটা অন্ধকার করে কিছু সময় নিন, যাতে করে চোখ অন্ধকারকে সয়ে যায়। এবার খুব ভাল করে দেখুন ...লাল, সবুজ বা হালকা নীল কোন আলো কোথা থেকে বের হচ্ছে কিনা খেয়াল করুন। যদি খুজে পান তবে ধরে নিতে পারেন সেটা ক্যামেরা।

৪। এটি একটি পুরানা পদ্ধতি তবে অনেক সময় কাজে লাগে,,, রুমের সকল তার গুলি খেয়াল করুন, কোন তার কোথায় গেছে সেটি বুঝার চেস্টা করুন। তার গুলির মাঝে যদি একটি তার বিশেষ কোন কোনায় চলে যায় বা এরকম সন্দেহ করেন তবে তার গন্তব্য এর শেষ টা দেখুন, পাইলেও পাইতে পারেন.....

৫। অনেক ক্যামেরাতে "মোশনডিটেক্টর" থাকে। মানে হলো আপনি রুমের যেদিকে যাবেন ক্যামেরার লেন্স অটোমেটিক সেই দিকে ঘুরে যাবে। আপনি রুম অন্ধকার করে একটি সময় নিন। এরপর খুব সাবধানে শব্ধ না করে রুমের এদিক থেক ওদিক যান। কান খাড়া করে কোন শব্দ পান কিনা খেয়াল করুন। আপনার নড়াচড়ার সাথে সাথে যদি হালকা লেন্স ঘুড়ার শব্দ পান তবেই বুঝবেন কাম হয়ে গেছে....

৬। অতি আধুনিক কিছু যন্ত্রপাতি পাওয়া যায় , যা গোপন ক্যামেরা সনাক্ত করতে পারে। সেগুলি মুলত চীনের তৈরি, কম দামে নেট হতে কিনতে পারেন, যদি আপনি খুব বেশি ঘুড়াঘুরি করেন বা গোপন ক্যামেরার ভয় পান, না হলে কিনার দরকার নেই, নিজেই বানাতে পারেন সেটা। বলছি ....

একটি সাদা কাগজ বা এ জাতীয় যে কোন কিছু নিন, না পেলে টয়লেট পেপারের ভিতর যে রোলটা থাকে সেটাও নিতে পারেন। সোজা কথায় কাগজ বা নিউজপেপার যাই হোক গোল করে বাইনোকুলার বা দুরবীনের মত করুন। বলতে ভুলে গেছি একটি টর্চলাইট লাগবে, মোড়ের দোকানেই পাবেন ছোট টর্চলাইট দামও বেশি না।
এবার ঘরের সব লাইট বন্ধ করে টর্চ লাইট টি জালান। যে জায়গায় টর্চের আলো ফেলবেন ঠিক সেই জায়গাটি রোল বা গোল করা কাগজের মধ্য দিয়ে এক চোখ দিয়ে তাকান। এভাবে সারা রুমটি খোজ করুন। সময় লাগবে প্রায় ৩০ মিনিট। যদি গোপন ক্যামেরা থাকে তবে টর্চের আলো ক্যামেরার ছোট লেন্সের উপর পরলে সেটা চিক চিক করবে ফলে আপনি যখন রোল করা কাগজের মধ্য দিয়ে দেখবেন তখন অনেকটা স হজেই চিনতে পারবেন। এব্যাপারে অভিগ্গ হতে চাইলে আপনার ডিজিট্যাল ক্যামেরাটি ঘরের ভিতর যেকোন জায়গায় চালু করুন বা লুকিয়ে ফেলুন, এর পর টর্চ আর রোল করা কাগজ দিয়ে চেস্টা করুন লুকানো ক্যামেরাটি বের করতে পারেন না, যদি পারেন তবে আপনি পারবেন,,,আপনার দ্বারাই হবে ....

আধুনিক প্রযুক্তি মানেই নতুন কিছু , নতুন ঝামেলাও বটে। শেষে বলি একটি কথা আপনার পরিচিত কেউ হতে পারেন গোপন ক্যামেরার শিকার। যদি সেটি ঘটেই যায়, তবে হই হট্টোগল করে পানি ঘোলা করবেন না। যার ছবি উঠেছে বা প্রকাশ পেয়েছে তার সাথে স্বাভাবিক আচরন করুন, কারন এতে উনার তো দোষ নেই। উনাকে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে দিন।


ভাল থাকুন। শুভ কামনা

তথ্যসুত্র: বই এবং ইন্টারনেট, হা হা হা।

শপিংমলের ড্রেসিং/ট্রায়ালরুমে(যেখানে মেয়েরা কাপড় পাল্টায় বা ফিটিং চেক করে) লেডিস টয়লেটে ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে সবার অজান্তে।কেউই জানেনা এই খবর,কিন্তু সেই ক্যামেরায় ধরা পড়ছে আমাদের অসংখ্য মা বোন।অল্পকিছু টাকার বিনিময়ে বিক্রি হচ্ছে সেসব নগ্ন ভিডিও বা ছবি।

আর তাই আমরা সবাই সচেতন হই।নিজের মা-বোন এবং দেশকে এই নোংরামির হাত থেকে রক্ষা করি।


Courtesy- Bangladesh in my heart (হৃদয়ে বাংলাদেশ)

-জাহানারা পিংকি
-Bakso Bondi
Safique

No comments:

Post a Comment